বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় এক কলেজছাত্রী তার প্রেমিক অটোরিকশাচালকের বাড়িতে গিয়ে অনশন শুরু করেছেন। প্রেমিকের বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানানোয় তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয় প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্রীটি একটি স্থানীয় কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। গত এক বছর ধরে তার সঙ্গে পাশের গ্রামের এক অটোরিকশাচালকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমিকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ এবং একাধিকবার দেখা-সাক্ষাৎ চলছিল। পরিবারের অজান্তেই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। মেয়েটির দাবি, প্রেমিক তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিল।
কিন্তু সম্প্রতি ওই যুবক বিয়েতে অনীহা প্রকাশ করলে মেয়েটি হতাশ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে কলেজছাত্রীটি প্রেমিকের বাড়িতে এসে ওঠেন এবং বিয়ের দাবি নিয়ে অনশন শুরু করেন। তিনি জানান, "ও আমাকে অনেকদিন ধরে ভালোবাসার কথা বলে এসেছে। এখন যখন বিয়ের সময় এসেছে, তখন সে পিছু হটছে। আমি এখানে অনশন করব যতক্ষণ না ও আমাকে বিয়ে করে।"
প্রেমিক যুবকের পরিবার প্রথমে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে চাইলেও এলাকার লোকজন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। বর্তমানে মেয়েটি ওই বাড়ির এক কক্ষে অবস্থান করছেন এবং তাকে মানসিকভাবে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এদিকে, যুবকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এখনো পুরো বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। ছেলেটির মা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। এখনই ছেলের বিয়ে দিতে পারব না। কিন্তু মেয়েটা যেভাবে বাড়িতে এসে বসে আছে, আমরা খুব সমস্যায় পড়ে গেছি।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য জানান, “ঘটনাটি আমরা জানতে পেরে মেয়েটির নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি। দুপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। মেয়েটি যেন কোনোভাবে বিপদের মধ্যে না পড়ে, সেটাও নজরে রাখা হচ্ছে।”
এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে নানা মন্তব্য করা হচ্ছে। কেউ মেয়েটির সাহসের প্রশংসা করছেন, আবার কেউ বলছেন, প্রেমের সম্পর্ককে আরও সচেতনভাবে দেখতে হবে।
বর্তমানে অনশনরত কলেজছাত্রী শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তবে তিনি এখনো বিয়ের দাবি থেকে সরে আসেননি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নজরদারি রাখা হচ্ছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।