সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ গ্রেপ্তার

0

 

সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় লোকসংগীত শিল্পী মমতাজ বেগমকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি অভিজাত এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গ্রেপ্তারের কারণ হিসেবে একটি পুরনো প্রতারণা মামলার সূত্র তুলে ধরা হয়েছে।


পুলিশ জানায়, ২০১৪ সালে একটি ব্যবসায়িক চুক্তিকে কেন্দ্র করে মমতাজের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেন করেন এবং পরবর্তীতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন না করে টাকা আত্মসাৎ করেন। মামলাটি অনেকদিন ধরেই চলছিল, তবে সম্প্রতি মামলার তদন্তে অগ্রগতি হলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।


মমতাজ বেগম, যিনি মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং টানা কয়েক মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি শুধু রাজনীতিতেই নয়, দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও এক জনপ্রিয় মুখ। তার বিরুদ্ধে ওঠা এমন অভিযোগে ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।


গ্রেপ্তারের পর তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় এবং আদালত তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তার আইনজীবীরা অবশ্য মামলাটি ভিত্তিহীন দাবি করে জামিন আবেদন করেছেন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, মমতাজ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন এবং তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এই মামলার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।


এদিকে, তার গ্রেপ্তারের খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকে আইন অনুযায়ী সঠিক বিচার দাবি করেছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন সাংস্কৃতিক আইকন ও সাবেক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ কতটা ন্যায়সঙ্গত।


স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “আইন সবার জন্য সমান। যেই হোক না কেন, যদি কেউ অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


এই ঘটনাটি প্রমাণ করে, অতীতের কোনো অপরাধ চাপা পড়ে না এবং যেকোনো সময় বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। তবে মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে এবং আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে—মমতাজ দোষী, না নির্দোষ।


পরবর্তী শুনানি আগামী সপ্তাহে নির্ধারিত হয়েছে। পুরো দেশ এখন অপেক্ষা করছে—একজন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ভাগ্যে কী লেখা আছে, তা জানতে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top