ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের সময় হাজির সেনাবাহিনী, অতঃপর...

News
0

 

চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় ট্রাক থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। গতকাল গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে, যখন কয়েকজন ব্যক্তি স্থানীয় সড়কে চলাচলকারী পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়ে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করছিল। তবে তাদের অপ্রত্যাশিত কার্যক্রমের খবর সেনাবাহিনীর একটি টহল দলের নজরে আসে এবং সঙ্গে সঙ্গে তারা সেখানে অভিযান চালায়।


স্থানীয়রা জানায়, ওই চাঁদাবাজ চক্র দীর্ঘদিন ধরে ট্রাকচালকদের কাছ থেকে ‘সড়ক ব্যবহারের খরচ’ বা ‘নিরাপত্তা খরচ’ নামে প্রতিনিয়ত টাকা আদায় করে আসছিল। তারা সাধারণত রাতের বেলা সক্রিয় হয়ে উঠে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ট্রাকচালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। গতকাল রাতেও একই কায়দায় কাজ চালাচ্ছিল তারা, কিন্তু এবার ভাগ্য তাদের সহায় হয়নি।


সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে চাঁদাবাজদের কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তিনজনকে ঘটনাস্থলেই আটক করা হয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের টাকাসহ কিছু নকল রশিদ ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করেন। পরে আটককৃতদের স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।


চট্টগ্রাম সেনানিবাস সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহাসড়কে চাঁদাবাজির অভিযোগ বেড়ে যাওয়ায় নিয়মিত টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর এক সদস্য জানান, “যেখানে আইনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটে কিংবা নাগরিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে, সেখানে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত।”


এদিকে এই ঘটনার পর এলাকার পরিবহন চালক ও সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় এক ট্রাকচালক বলেন, “প্রায় প্রতিদিন আমাদের টাকা দিতে হতো। সেনাবাহিনী আসায় মনে হচ্ছে এবার হয়তো এই দুর্ভোগ থেকে বাঁচা যাবে।”


চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সেনাবাহিনীর এই তৎপরতা প্রশংসনীয়। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।


এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হলো যে, নিরাপত্তা বাহিনীর সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া সমাজ থেকে এমন অপরাধ নির্মূল করা কঠিন। সাধারণ জনগণ ও যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান চলমান রাখা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


এই ঘটনায় এলাকায় আলোচনা ও সচেতনতা বেড়েছে, যা ভবিষ্যতে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top