বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের হাতে প্রায় ১৫০-১৬০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি মূলত ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বৈরিতার ফলস্বরূপ গড়ে উঠেছে। ১৯৯৮ সালে ভারতের পর পাকিস্তানও সফলভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। তখন থেকেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ‘ডিটারেন্স’-এর ভিত্তিতে এক ধরনের কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রয়েছে।
সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কিছু আলোচনায় ইঙ্গিত দেওয়া হয় যে পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এটি সামরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র জেনারেল আহসান ইকবাল স্পষ্টভাবে জানান, “পাকিস্তান তার সীমান্ত ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পূর্ণ সক্ষম। এটি শুধু একটি সামরিক শক্তি নয়, বরং একটি পরিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। যারা মনে করে পাকিস্তানে হামলা চালানো সহজ হবে, তারা মারাত্মক ভুল করছে।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে পাকিস্তান একটি কড়া বার্তা দিয়েছে— যে কোনো বহিরাগত আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা শুধু তাদের অধিকার নয়, বরং সক্ষমতার মধ্যেও পড়ে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র শুধু প্রতিরক্ষার জন্য নয়, এটি দেশের ভূরাজনৈতিক অস্তিত্ব ও কৌশলগত নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চায়, দক্ষিণ এশিয়ার এই পারমাণবিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো উত্তেজনা যেন সংঘাতের দিকে না গড়ায়। জাতিসংঘ এবং আঞ্চলিক শক্তিগুলো বারবার শান্তিপূর্ণ সংলাপ ও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ওপর জোর দিচ্ছে।
বর্তমান বিশ্ব যেখানে বহু জায়গায় সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানে পারমাণবিক শক্তিধর দুই রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বড় ধরণের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এ কারণেই বিশ্লেষকরা মনে করেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিঃসন্দেহে আঞ্চলিক রাজনীতিতে একটি ভারসাম্যের ভূমিকা পালন করে।
সব মিলিয়ে এটি পরিষ্কার, পাকিস্তানকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। এটি শুধুই একটি দেশ নয়, বরং এমন একটি কৌশলগত শক্তি যার উপর হামলার চিন্তা করাও বিপজ্জনক হতে পারে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত এই বাস্তবতাকে মাথায় রেখে কূটনৈতিকভাবে এগোনো, যেন শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।