বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ ঘিরে। দলটির নেতারা বলছেন, বিএনপিকে দুর্বল করার নানা চেষ্টাই আসলে দেশের গণতন্ত্রকে সংকটে ফেলছে। তাঁদের ভাষায়, বিএনপির বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্রই গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "বর্তমান সরকার শুধু বিএনপিকেই নয়, বরং সমগ্র গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকেই হুমকির মুখে ফেলেছে। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া মূলত একটি একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা।"
তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বিএনপির হাজারো নেতাকর্মীকে গুম, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলায় হয়রানি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হতে হয়েছে। এ অবস্থাকে একটি সুসংগঠিত ষড়যন্ত্র হিসেবে তুলে ধরে বিএনপি নেতারা বলছেন, এটা শুধু দলের বিরুদ্ধে নয়, বরং দেশের সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার চেষ্টা।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, একটি শক্তিশালী ও কার্যকর বিরোধী দল ছাড়া কখনোই গণতান্ত্রিক কাঠামো টিকে থাকতে পারে না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে মাঠচ্যুত করতে যেসব আইনপ্রয়োগকারী ও প্রশাসনিক পদ্ধতি ব্যবহার করছে, তা মূলত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও জনগণের নির্বাচনী অধিকারকেও খর্ব করছে।
তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। দলটির নেতারা বলেন, বিএনপি বারবার নির্বাচন বর্জন করে গণতন্ত্রের পথ থেকে নিজেই সরে গেছে এবং এখন সংবিধানবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে আবারো অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, "গণতন্ত্রের নামে বিএনপি আসলে নির্বাচন ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে অস্বীকার করে। তারা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের রাজনীতিতে বিরোধী দলকে কোণঠাসা করা এবং মতের পার্থক্য দমন করার প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এটি বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও বাড়তে পারে।
সবমিলিয়ে, বিএনপির দাবি অনুযায়ী, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আর গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র একই’ — এই বক্তব্য এখন একটি রাজনৈতিক বক্তব্যের চেয়ে বেশি, একটি প্রতিরোধী অবস্থান এবং দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।