সেনাবাহিনীর দেওয়া শা-স্তি 'সান্ডা' ট্রেনিং নামে ভাইরাল

0


 সেনাবাহিনীর দেওয়া শা-স্তির নাম ‘সান্ডা’ ট্রেনিং। সাম্প্রতিক সময়ে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। টিকটক, ফেসবুক ও ইউটিউবের বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তরুণদের একটি দলকে মাঠে দাঁড় করিয়ে সেনা স্টাইলে কঠোর শারীরিক অনুশীলন করানো হচ্ছে। কখনও কাঁধে চড়ানো হচ্ছে, কখনও আবার কোলের উপর বসিয়ে চাপ প্রয়োগ করে ব্যায়াম করানো হচ্ছে। কেউ কেউ আবার ‘থাপ্পড়’ ও ‘ধমক’ খাওয়ার ভান করছে। ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেকে হাসছে, আবার কেউ সিরিয়াস ভঙ্গিতে নির্দেশ দিচ্ছে।


বিষয়টি যে শুধুই ভাইরাল ভিডিও বা বিনোদনের উপাদান নয়, সেটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে ভিডিওগুলো দেখে। অনেকেই বলছেন, এটি একটি জনপ্রিয় ‘শাস্তি’ বা ‘শোধরানো’র পদ্ধতি হিসেবে তরুণদের মধ্যে পরিচিত হয়ে উঠেছে। যদিও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এমন কোনো প্রশিক্ষণের অনুমোদনের কথা বলা হয়নি, তবু লোকমুখে একে সেনাবাহিনীর স্টাইল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।


বিশেষ করে স্কুল-কলেজের কিশোরদের মধ্যে এই ‘সান্ডা ট্রেনিং’ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ মজা করে, আবার কেউ সিরিয়াসভাবে দলগতভাবে এই ব্যায়াম করে ভিডিও বানাচ্ছে। ‘সান্ডা’ নামটি নিয়েও অনেকে কৌতূহলী। কেউ বলছে এটি মারমুখী ব্যায়ামের প্রতীক, আবার কেউ বলছে এটি একটি অপভাষা যার মাধ্যমে ভয় দেখিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করা হয়।


এই প্রবণতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বলছে এটি তরুণদের মধ্যে শৃঙ্খলা আনার একটি অভিনব উপায়, আবার কেউ একে শিশু ও কিশোরদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী কার্যক্রম বলেও আখ্যা দিয়েছে।


বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিনা তত্ত্বাবধানে এমন ‘ট্রেনিং’ বা শাস্তির চর্চা তরুণদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে দলবদ্ধভাবে কাউকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার এই সংস্কৃতি ভবিষ্যতে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মনোবিজ্ঞানীরা।


তবে অনেকেই এটিকে কেবল একটি ভাইরাল ট্রেন্ড হিসেবে দেখছেন, যার স্থায়িত্ব হয়তো দীর্ঘ হবে না। তবুও স্কুল-কলেজের পরিবেশে বা পাড়া-মহল্লায় এমন কার্যক্রমের প্রতি অভিভাবকদের নজরদারি জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


এই 'সান্ডা ট্রেনিং' আদতে কতটা কার্যকর, কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং কে বা কারা এটি শুরু করেছে—তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে এটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে এটি তরুণ সমাজে নতুন এক সংস্কৃতির রূপ নিচ্ছে, যা নিয়ে এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top