আজ সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করার কিছুক্ষণ পরেই একটি যাত্রীবাহী বিমান পাখির সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে। এ ঘটনা ঘটে সকাল ৯টার দিকে, যখন বিমানটি রানওয়ে ছেড়ে আকাশে উঠছিল। বিমানটি দেশের অভ্যন্তরীণ এক রুটে যাত্রা করছিল বলে জানা গেছে।
বিমানে থাকা একাধিক যাত্রী জানিয়েছেন, উড্ডয়নের পরপরই হঠাৎ একটি বিকট শব্দ শোনা যায়। মুহূর্তেই বিমানের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক যাত্রী ভয়ে চিৎকার করে উঠেন। বিমানটি কেঁপে ওঠে এবং কিছুক্ষণের জন্য ভারসাম্য হারাতে দেখা যায়। তবে পাইলটের দক্ষতায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। বিমানটি আবার নিরাপদে শাহজালাল বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাখির আঘাতে বিমানের একটি ইঞ্জিন সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। পাইলট সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিমানের গতি কমিয়ে নিরাপদে অবতরণ নিশ্চিত করেন। যাত্রীদের কাউকে আঘাত লাগেনি, তবে মানসিকভাবে তারা ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, “এধরনের পাখির আঘাত বর্ষাকাল কিংবা খাবারের সন্ধানে পাখিদের বেশি ঘোরাফেরার সময় বেশি ঘটে। আমরা নিয়মিতভাবে বন্যপ্রাণী নিয়ন্ত্রণে কাজ করি, কিন্তু কিছু সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায়।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবন্দর এলাকায় পাখির সংখ্যা বাড়ার পেছনে কিছু নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে, যেমন খোলা ডাস্টবিন, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং আশপাশে জলাশয়ের অস্তিত্ব। এসব কারণে পাখিরা বিমানবন্দরের আশপাশে ভিড় জমায় এবং তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে উড্ডয়ন ও অবতরণের সময়।
ঘটনার পর বিমানের যাত্রীদের অন্য একটি বিমানে করে গন্তব্যে পাঠানো হয়। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আরও সতর্কতা গ্রহণ করেছে। রানওয়ের পাশে পাখি তাড়ানোর যন্ত্র এবং অডিও ডিটারেন্ট ব্যবহারের বিষয়ে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও ঢাকার এই বিমানবন্দরে একাধিকবার পাখির আঘাতে বিমান চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যার দিকে এমন ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। এ কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলো।
এমন ঘটনায় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, পাশাপাশি বিমানবন্দর এলাকার পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর ব্যবস্থার দাবি জোরালো
হয়েছে।