“এই অপমানজনক কার্যক্রমের কোন কারণ খুঁজে পেলাম না!”—এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য আসিফ মাহমুদ। সাম্প্রতিক একটি প্রশাসনিক ঘটনা ঘিরে গণমাধ্যমে মুখ খুলে তিনি নিজের ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তার এই বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
সূত্র মতে, একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তাকে উদ্দেশ্য করে কিছু ‘অসম্মানজনক’ আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, “আমি বিস্মিত, ব্যথিত এবং অপমানিত। এ ধরনের আচরণের কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা আমি খুঁজে পাইনি।” তার ভাষ্যমতে, ঘটনাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যমূলক। তবে তিনি স্পষ্টভাবে কারো নাম উল্লেখ না করলেও রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, সরকার বা প্রশাসনের অভ্যন্তরের একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী এর পেছনে রয়েছে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “জনগণের সেবা করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব। সেখানে যদি আমাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়, তবে সেই সেবার মনোবল নষ্ট হয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি কোনো পদ-পদবির জন্য এখানে আসিনি। এসেছি দেশের সংকটে সহযোগিতার হাত বাড়াতে। কিন্তু যে আচরণ করা হলো, তা হতাশাজনক।”
ঘটনার বিস্তারিত জানা না গেলেও, প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্ত এবং পদায়ন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল বলে গুঞ্জন রয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক কিছু কর্মকর্তার বদলি ও নিয়োগ নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তা এই অপমানজনক ঘটনার পটভূমি তৈরি করতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।
উল্লেখ্য, আসিফ মাহমুদ একজন নিরপেক্ষ ও কৌশলী উপদেষ্টা হিসেবে পরিচিত ছিলেন এতদিন। কিন্তু তার এই সরাসরি অভিযোগ এবং ক্ষোভ প্রকাশ প্রশাসনের ভেতরের দুর্বলতা ও বিভাজনকে সামনে এনে দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ঘটনা উপদেষ্টা পরিষদের ঐক্য ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে নেপথ্যে থাকা প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে একটি তদন্তের দাবি উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে এই অপমানজনক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি আসতে শুরু করেছে।
জনগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—যদি এমন একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে এভাবে অপমানের শিকার হতে হয়, তবে সাধারণ মানুষের কী পরিণতি হবে? দেশের চলমান সংকটের সময়ে এমন অস্থিরতা দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলেও মত দিয়েছেন কেউ কেউ। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কীভাবে এই ঘটনা সামাল দেয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের অভিযোগ কতটা গুরুত্ব সহকারে নেয়।