ভারতকে 'রিয়েলিটি মেনে নিতে' বলল পাকিস্তান

0


 পাকিস্তান ভারতের উদ্দেশে বলেছে, ‘রিয়েলিটি মেনে নিন।’ এই বক্তব্য এসেছে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কাশ্মীর একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিতর্কিত এলাকা এবং এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে কাশ্মীরের জনগণ, কোনো একক রাষ্ট্র নয়। ইসলামাবাদ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, দিল্লির উচিত বাস্তবতা মেনে চলা এবং ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী দায়িত্বশীল আচরণ করা।


ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, পুরো কাশ্মীর বরাবরের মতোই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। এর পাল্টা জবাবেই পাকিস্তান এই মন্তব্য করে। পাকিস্তান দাবি করে, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপমহাদেশ বিভাজনের সময় থেকে কাশ্মীরের জনগণ তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য লড়াই করে আসছে। তারা জাতিসংঘের প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরে বলেছে, এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নেওয়া।


ইসলামাবাদ আরো বলেছে, ভারতের পক্ষ থেকে আগ্রাসী মন্তব্য এবং সামরিক দমননীতি কাশ্মীর সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানকে বাধাগ্রস্ত করছে। পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাশ্মীর সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান অত্যাবশ্যক। ইসলামাবাদ এও হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের অবস্থান থেকে কোনোভাবেই পিছু হটবে না।


বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পাল্টাপাল্টি মন্তব্য শুধু দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ায় এবং আলোচনার পথকে সংকীর্ণ করে। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যু বহু দশক ধরে এক অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর প্রায়ই সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।


পাকিস্তান মনে করে, কাশ্মীরের জনগণ আন্তর্জাতিক আইনের সুরক্ষায় একটি ন্যায্য সমাধান পাওয়ার দাবি রাখে। অন্যদিকে ভারত বারবার বলে আসছে যে, কাশ্মীর তার অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং তাতে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। এই অবস্থানে দুই দেশই অনড় থাকায় কাশ্মীর সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠছে।


পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান কঠিন। পাকিস্তানের ‘রিয়েলিটি মেনে নেওয়ার’ আহ্বান কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের এই চাপা উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থেকে যাচ্ছে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top