'বড় গেম খেলতে' দেশে আনা হয় সুব্রত বাইনকে

0

 

বাংলাদেশে ‘বড় গেম’ খেলার অংশ হিসেবে কুখ্যাত ভারতীয় সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে আনার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এক সময় ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা এই দুর্ধর্ষ অপরাধীকে বাংলাদেশে আশ্রয় ও সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়টি নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সুব্রত বাইন শুধু সীমান্তে চোরাচালান বা অস্ত্র ব্যবসায় নয়, বরং দেশের ভেতরে একটি বড় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও নাশকতার ছক আঁকার অংশ হিসেবেই বাংলাদেশে সক্রিয় ছিল।


সুব্রত বাইন ভারতের মাওবাদী ও অপরাধী চক্রের সাথে যুক্ত থাকার পাশাপাশি একাধিক হত্যা, বিস্ফোরণ ও চাঁদাবাজির মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্টও জারি ছিল। ২০০২ সালে কলকাতায় একাধিক বোমা হামলার ঘটনায় তার নাম উঠে আসে। সেই সময় ভারতীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতায় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আত্মগোপনে চলে যায় সুব্রত। তবে প্রশ্ন হলো, এত বছর ধরে সে কীভাবে বাংলাদেশে ছিল, এবং কার সহযোগিতায়?


বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, একটি প্রভাবশালী মহল নিজেদের স্বার্থে এবং ‘বড় গেম’ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে তাকে দেশে নিয়ে আসে। দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি ও বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। শুধু তাই নয়, সুব্রতের মাধ্যমে সীমান্তে অস্ত্র ও মাদক পাচার, অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।


২০১২ সালে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে সুব্রত বাইনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, তার আগমনের অনুমতি কে দিয়েছিল? কারা তাকে ব্যবহার করছিল ‘বড় গেম’ নামের এই ষড়যন্ত্রে?


সাবেক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ছিল বাংলাদেশে একটি গোপন রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ। সুব্রতের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা নয়, বরং দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতিও হুমকি। একে কেন্দ্র করে একটি বড় চক্রান্ত হয়েছিল, যার নেপথ্যে ছিল দেশি-বিদেশি শক্তির যোগসাজশ।


এই ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে তদন্তের দাবি উঠছে। কে বা কারা তাকে দেশে এনে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে, কোন কোন সংস্থা তাকে ব্যবহার করেছে—তা খুঁজে বের করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে এমন অপরাধীরা আবারও দেশে ঢুকে ‘বড় গেম’ খেলতে পারে।


এ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। অনেকেই মনে করছেন, দেশের স্বার্থে এই ষড়যন্ত্রের পেছনের রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top