সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশের সব দূরপাল্লার বাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাস মালিকদের একাধিকবার বৈঠকে ডেকে বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাসে ওঠা-নামা, চালকের আচরণ, ভাড়া নেওয়ার পদ্ধতি ও রাতের বেলা চলাচলের সময় যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়গুলো সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি বাসে অন্তত দুটি ক্যামেরা বসাতে হবে—একটি বাসের সামনের অংশে, যেখানে চালক থাকে, আরেকটি পেছনের দিকে যাত্রীসভার উদ্দেশ্যে। এই ক্যামেরাগুলোর ফুটেজ কমপক্ষে ১৫ দিন সংরক্ষণ করতে হবে এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে অনেক যাত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, দীর্ঘ ভ্রমণের সময় বিশেষ করে রাতের যাত্রায় নিরাপত্তা নিয়ে বরাবরই উদ্বেগ থাকে। সিসি ক্যামেরা থাকলে চালক-হেলপারদের অনৈতিক আচরণ বা বাহির থেকে সংঘটিত কোনো অপরাধ দ্রুত শনাক্ত ও প্রতিরোধ করা সহজ হবে।
অন্যদিকে, কিছু বাস মালিক এই নির্দেশনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, অধিকাংশ বাস আগে থেকেই লোকসানে চলছে। সেখানে সিসি ক্যামেরা বসানো, সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ অনেক বড় চাপ হয়ে দাঁড়াবে। তবে সরকার বলছে, এটি জনস্বার্থে নেওয়া সিদ্ধান্ত এবং প্রয়োজনে কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা বা ভর্তুকির বিষয়েও ভাবা হতে পারে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, সিসি ক্যামেরা থাকলে কেবল অপরাধ নয়, চালকের বেপরোয়া চালানো, হেলপারের অসদাচরণ এবং বাসে ভাড়া সংক্রান্ত অনিয়মও কমে আসবে। এতে দূরপাল্লার যাত্রা আরও নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক হবে।
সরকার আশা করছে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থায় এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে এবং যাত্রীসেবার মান উন্নত হবে।
