নাতনিকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় নানাকে কুপিয়ে হত্যা

News
0
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় নাতনিকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় আবদুল খালেক (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নানাকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল খালেক ওই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন ধরেই আবদুল খালেকের নাতনি স্কুলে যাওয়া-আসার পথে একদল যুবক প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি নানার নজরে এলে তিনি অভিযুক্তদের সতর্ক করে দেন এবং স্থানীয়ভাবে কয়েকবার প্রতিবাদও জানান। এতে উত্ত্যক্তকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে শুরু করে।

ঘটনার দিন বিকেলে খালেক মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা তিন-চারজন যুবক তার ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এই হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রশিদ জানান, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তি তার নাতনিকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে অভিযান চলছে।”

এদিকে নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। নিহতের মেয়ে বলেন, “আমার বাবাকে শুধু ন্যায়বিচারের কথা বলার জন্যই হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”

এই বর্বরোচিত ঘটনায় স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, একজন প্রবীণ নাগরিক যিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন, তাকে হত্যার মাধ্যমে সমাজে ভয়ঙ্কর বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হলো। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

এই হত্যাকাণ্ড আবারও প্রমাণ করে, ইভটিজিং শুধু সামাজিক সমস্যা নয়, তা কখনো কখনো প্রাণঘাতী রূপও নিতে পারে। ন্যায় ও নিরাপত্তার দাবিতে দেশের প্রতিটি নাগরিককে একসাথে সোচ্চার হতে হবে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top