ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে বিজয়ী বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে আজকের মধ্যেই শপথ পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সোমবার (২৭ মে) এই নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে আর খান রবিন।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে ইশরাক হোসেন বিপুল ভোটে জয়ী হন। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা যায়, তিনি প্রায় ৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। কিন্তু আজ ২৭ মে সকাল পর্যন্ত তাঁকে শপথ গ্রহণ করানো হয়নি। এটি সংবিধান ও স্থানীয় সরকার আইন লঙ্ঘনের সামিল বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী।
নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পর দ্রুততম সময়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বিজয়ী প্রার্থীদের শপথের ব্যবস্থা করতে হয়। অথচ ইশরাক হোসেনের বেলায় ইচ্ছাকৃতভাবে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে, যা তাঁর সাংবিধানিক অধিকার ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগকে বাধাগ্রস্ত করছে।
আইনজীবী রবিন বলেন, “সরকারি কর্মকর্তারা সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তা চ্যালেঞ্জ করা যাবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির শপথ গ্রহণ বিলম্ব করিয়ে সরকার জনগণের রায়ের প্রতি অসম্মান দেখাচ্ছে।” তিনি বলেন, “নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়াতে হবে, অন্যথায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে।”
এদিকে বিষয়টি নিয়ে বিএনপির নেতারা দাবি করছেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে ইশরাকের শপথগ্রহণে বিলম্ব করছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেন, “জনগণের ভোটে নির্বাচিত কাউন্সিলরকে শপথ গ্রহণ করতে না দেওয়া অগণতান্ত্রিক মনোভাবের প্রকাশ। এটি স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রীয় অপব্যবহার।”
তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির শপথগ্রহণ বিলম্ব হলে সেটি আদালতে চ্যালেঞ্জযোগ্য। আদালত চাইলে নির্দেশনা দিয়েও শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করতে পারে। বিষয়টি নিয়ে এখন দেশের রাজনৈতিক মহলসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও আলোচনার ঝড় উঠেছে।
ইশরাক হোসেন ইতিপূর্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এবার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে তিনি আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন।