দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন দেশের অধিকাংশ এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির পাশাপাশি বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব এবং মধ্যাঞ্চলে মেঘের ঘনত্ব বেড়েছে। এর ফলে কোথাও কোথাও প্রবল বজ্রপাত ও দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত বজ্রবৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে পারে। শিশু, বৃদ্ধ এবং মাঠে কাজ করা কৃষকদের প্রতি অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। খোলা মাঠে, পানির ধার বা উঁচু গাছের নিচে অবস্থান না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের বৈদ্যুতিক ফসলি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকার জন্যও বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বৈশাখের শুরুতেই এমন বজ্রঝড় বাংলাদেশে স্বাভাবিক ঘটনা হলেও এবারের বজ্রপাতের প্রবণতা কিছুটা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বায়ুমণ্ডলে আর্দ্রতা বেশি থাকছে, যার ফলে বজ্রপাতের ঘটনা বেড়েছে।
তাপমাত্রার দিক থেকে বলা হয়েছে, বৃষ্টির কারণে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও আর্দ্রতার কারণে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় ভারী বৃষ্টি হবে না, সেখানে রাতের দিকে গরম বেশি অনুভূত হবে।
এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ও সাধারণ জনগণকে সতর্ক করে জানিয়েছে, বজ্রপাতের সময় নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া উচিত। বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন বা বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে, বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে ঝুঁকি থাকলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে বড় আকারের বজ্রনিরোধক (লাইটনিং অ্যারেস্টর) স্থাপনের উদ্যোগ বাড়ানো প্রয়োজন। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এবং উন্মুক্ত স্থানে এসব ব্যবস্থা না থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়তে পারে।