দ্রুতগতির নেট 'স্টারলিংক' নিতে মাসিক খরচ কত?

News
0
বিশ্বের দ্রুতগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা 'স্টারলিংক' এখন অনেকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রযুক্তিবিশ্বে বিপ্লব ঘটানো ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের এই প্রকল্প পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে কাজ করছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—এই উন্নত ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারের জন্য মাসে কত খরচ পড়ছে?

বর্তমানে স্টারলিংকের মূল প্যাকেজ ব্যবহার করতে গ্রাহকদের প্রতি মাসে প্রায় ১১০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ১২,৫০০ টাকা) খরচ করতে হয়। তবে শুধু মাসিক ফি দিলেই হবে না; স্টারলিংকের বিশেষ 'কিট' বা সেটআপ বক্স কিনতেও আলাদা করে অর্থ ব্যয় করতে হয়। এই কিটের মূল্য প্রায় ৫৯৯ মার্কিন ডলার, যা এককালীন প্রদান করতে হয়। এতে থাকে একটি স্যাটেলাইট ডিশ, রাউটার, পাওয়ার কেবল এবং মাউন্টিং স্ট্যান্ড।

বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর জন্য যেখানে ফাইবার অপটিক বা মোবাইল নেটওয়ার্ক সহজে পৌঁছায় না, সেখানে স্টারলিংক একটি দারুণ বিকল্প হয়ে উঠছে। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা ২৫০ এমবিপিএস পর্যন্ত ডাউনলোড স্পিড এবং প্রায় ২০ থেকে ৫০ এমএস এর মধ্যে ল্যাটেন্সি (ডাটা আদান-প্রদানের দেরি) পেতে পারেন।

স্টারলিংক বর্তমানে বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশে পরিষেবা দিচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অঞ্চলে সম্প্রসারণ করছে। বাংলাদেশে স্টারলিংকের পরিষেবা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়নি, তবে ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিষেবা চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বাংলাদেশে চালু হলে খরচের পরিমাণ স্থানীয় বাজার এবং সরকারের নীতিমালার ওপর নির্ভর করে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।

এছাড়া স্টারলিংক বিভিন্ন ধরণের সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজও অফার করে। উদাহরণস্বরূপ, যারা চলাফেরার মধ্যে থেকেও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান তাদের জন্য রয়েছে 'স্টারলিংক ফর RVs' (বর্তমানে 'রোম' নামে পরিচিত)। এই পরিষেবার খরচ সামান্য বেশি, মাসিক প্রায় ১৩৫ মার্কিন ডলার। আর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আছে আরও দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য সংযোগের জন্য বিশেষ প্যাকেজ, যেখানে খরচ মাসে প্রায় ৫০০ ডলার বা তারও বেশি হতে পারে।

স্টারলিংকের লক্ষ্য একটাই—বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে ইন্টারনেট এখনো বিলাসিতা, সেখানে উচ্চগতির নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া। যদিও খরচ তুলনামূলক বেশি, তবে যারা নিরবিচ্ছিন্ন, দ্রুত এবং বিশ্বস্ত ইন্টারনেট চান, তাদের জন্য স্টারলিংক হতে পারে একটি মূল্যবান বিনিয়োগ।

প্রযুক্তির এই নতুন দিগন্ত আগামী দিনে কীভাবে আমাদের জীবনধারা পরিবর্তন করবে, সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top