নিজাম উদ্দিন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। রাজনীতির প্রতি তাঁর আগ্রহ দীর্ঘদিনের। নিজেকে একজন নিবেদিতপ্রাণ বিএনপি সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় থেকে তিনি এই প্রতিজ্ঞা পালন করে আসছেন। সেই নির্বাচনকে তিনি “একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচন” হিসেবে মনে করেন এবং এরপর থেকেই তিনি ভাত খাওয়া বন্ধ করে দেন।
নিজাম বলেন, “২০১৪ সালের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমি তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নেই, যতদিন বিএনপি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় না আসে, ততদিন আমি ভাত মুখে তুলব না।” তিনি জানান, প্রতিদিন রুটি, সবজি, ডাল, ডিম, কখনো কখনো ফলমূল দিয়ে তাঁর খাবার সীমাবদ্ধ থাকে, কিন্তু ভাত কখনোই খাওয়া হয় না।
তাঁর পরিবার ও প্রতিবেশীরা শুরুতে বিষয়টিকে মজা হিসেবে দেখলেও এখন তাঁর প্রতিজ্ঞা ও একাগ্রতায় অনেকেই বিস্মিত। তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরাও শুরুতে দুশ্চিন্তায় ভুগলেও পরে স্বামীর সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করে সহযোগিতা করছেন।
নিজামের দাবি, এটি তাঁর শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের একমাত্র পথ। তিনি মনে করেন, এই প্রতিজ্ঞা তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাসের প্রতি দৃঢ়তা এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতি তাঁর অঙ্গীকারকে তুলে ধরে। “আমি কারও ক্ষতি করছি না, আমি শুধু নিজের প্রতি এক অঙ্গীকার পালন করছি,” — বলেন তিনি।
বিএনপি নেতাকর্মীদের অনেকেই নিজামের এই প্রতিজ্ঞার কথা জানেন এবং তাঁকে একজন অনন্য সমর্থক হিসেবে সম্মান করেন। ফটিকছড়ি বিএনপির একজন নেতা বলেন, “নিজাম ভাইয়ের এই প্রতিজ্ঞা আমাদের দলের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা ও প্রত্যাশারই প্রতিফলন।”
নিজাম উদ্দিন এখনও আশাবাদী। তাঁর বিশ্বাস, দেশের মানুষ গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও ভোটাধিকার ফিরে পেতে আবার বিএনপিকে ক্ষমতায় আনবে। সেদিনই তিনি ১১ বছরের এই কঠিন ত্যাগের অবসান ঘটাবেন এবং আবার একমুঠো ভাত মুখে তুলবেন।