ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানি সেনারা বিনা উসকানিতে ভারতের সীমান্ত পোস্টগুলোর ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করে। পাল্টা জবাবে ভারতও কড়া প্রতিরোধ গড়ে তোলে। প্রায় ৮ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে পাকিস্তানি সেনাদের একাধিক বাঙ্কার ধ্বংস করা হয় এবং তাদের অনেক সৈন্য হতাহত হয়।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেছে যে, ভারতীয় সেনারা প্রথমে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গোলাগুলি শুরু করে। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের হামলায় তাদের ১১ জন সৈন্য নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে তারা দাবি করে, পাকিস্তানও যথাযথ জবাব দিয়েছে এবং ভারতীয় পক্ষের বড় ক্ষতি সাধন করেছে।
এদিকে সংঘর্ষের কারণে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বহু মানুষ নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানায়, বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং সীমান্তবর্তী স্কুলগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি কাশ্মীর অঞ্চলে বাড়তে থাকা উত্তেজনার পটভূমিতে এই সংঘর্ষ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দুই দেশের মধ্যে পূর্বেও একাধিকবার সীমান্তে সংঘর্ষ হয়েছে, তবে এবারের প্রাণহানির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি।
ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশেরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে অপরের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে অভিযোগ তুলেছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠন শান্তির আহ্বান জানিয়েছে এবং উভয়পক্ষকে সংযম দেখানোর অনুরোধ করেছে।
প্রসঙ্গত, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যু বহুদিন ধরেই উত্তপ্ত বিষয়। ১৯৪৭ সালের পর থেকে দুই দেশই অঞ্চলটির পুরোপুরি অধিকার দাবি করে আসছে। সেই বিরোধের জের ধরেই প্রায়ই সীমান্তে এই ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।
বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও উভয় দেশই বলছে, তারা বড় ধরনের যুদ্ধ চায় না। তবে সামরিক প্রস্তুতি ও সীমান্তে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।