মহামান্য,
আমার সরকারের নির্দেশে এবং ১৭ মার্চ ২০২৫ তারিখের (S/2025/166) চিঠিসহ ইরানের পূর্ববর্তী চিঠিগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে, আমি আপনাকে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি গুরুতর আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন সম্পর্কে লিখছি।
৩০ মার্চ ২০২৫ তারিখে এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবারও শক্তির ভাষায় কথা বলেছেন এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানকে সামরিক হামলার হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি তারা চুক্তি না করে, তাহলে বোমাবর্ষণ হবে। এমন বোমাবর্ষণ, যা তারা আগে কখনো দেখেনি।’
এ ধরনের দায়িত্বহীন ও যুদ্ধবাজ মন্তব্য আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের মূল নীতির সরাসরি লঙ্ঘন। বিশেষ করে জাতিসংঘ সনদের ২(৪) অনুচ্ছেদ, যা কোনো দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বা রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ বা বলপ্রয়োগের হুমকি দেওয়া নিষিদ্ধ করে।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সব আন্তর্জাতিক নিয়ম ও নীতিকে অগ্রাহ্য করে আসছেন। তিনি বারবার স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোকে বলপ্রয়োগের হুমকি দিয়ে আসছেন, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক যে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তার দায়িত্ব উপেক্ষা করছে এবং রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য সামরিক শক্তিকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
এই গুরুতর লঙ্ঘন ও সম্ভাব্য পরিণতির আলোকে ইরান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান জানাচ্ছে যে, তারা তাদের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্যই মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই হুমকির নিন্দা জানাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আনুগত্য নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও নিরাপত্তা পরিষদ এই উসকানিমূলক যুদ্ধবাজ আচরণের বিরুদ্ধে নীরব থাকতে পারে না।
ইরান সর্বদা আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সংঘাত বা উত্তেজনার কোনো ইচ্ছা পোষণ করে না। তবে যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের বিষয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিচ্ছে এবং যদি যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্র ইসরাইল ইরানের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা বা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়, তবে দ্রুত ও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। যেকোনো শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ দায়ী থাকবে।
আমি কৃতজ্ঞ হবো যদি আপনি এই চিঠিটি নিরাপত্তা পরিষদের একটি আনুষ্ঠানিক নথি হিসেবে প্রচার করেন।
মহামান্য, অনুগ্রহপূর্বক আমার সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা গ্রহণ করুন।