হাসির জন্য প্রাণ গেল যুবকের দুই মেয়ের যে শাস্তি চাইলেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

News
0


 সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে আলোচিত ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ দুই তরুণীর প্রতি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার অদূরে একটি এলাকায়, যেখানে দুই মেয়ে মজা করার ছলে এক যুবককে প্রাণঘাতী অবস্থায় ফেলে দেয়, যার পরিণতিতে ওই যুবক মারা যান।


জানা গেছে, হাস্যরসের ছলে তারা একটি "প্র্যাঙ্ক ভিডিও" বানাচ্ছিলেন। ভিডিও ধারণের সময় এক তরুণের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়, যাতে তিনি মারাত্মক আঘাত পান। কিছুক্ষণ পরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুরো ঘটনাটি ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছিল, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।


শায়খ আহমাদুল্লাহ এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, "কেউ যদি মজা করতে গিয়ে অপরাধমূলক আচরণ করে এবং তার ফলে কারও মৃত্যু হয়, তা ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ। এ ধরনের কাজের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া আবশ্যক, যাতে সমাজে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।"


তিনি আরও বলেন, "এই দুই মেয়ের কাজ কোনোভাবেই নিরীহ মজার পর্যায়ে পড়ে না। বরং এটা সরাসরি হত্যা বা হত্যার সমতুল্য অপরাধ। তাই ইসলামী আইনে তাদের বিরুদ্ধে কঠিনতম শাস্তি দাবি করা উচিত। শাস্তি যদি যথোপযুক্ত না হয়, তবে ভবিষ্যতে এমন বেদনাদায়ক ঘটনা আরও বাড়বে।"


শায়খ আহমাদুল্লাহ বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের সামাজিক দায়িত্ববোধের প্রতি সচেতন হতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "ইন্টারনেটের যুগে ‘ভিউ’ বা ‘লাইক’ পাওয়ার লোভে অনেকে নিজেদের সীমালঙ্ঘন করছে। ইসলাম মজা বা কৌতুককে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেনি, কিন্তু তা অবশ্যই মানুষের সম্মান, নিরাপত্তা এবং জীবনের প্রতি সম্মান বজায় রেখে হতে হবে।"


এদিকে, নিহত যুবকের পরিবার শোকাহত অবস্থায় বিচার চেয়েছেন। তারা অভিযুক্ত মেয়েদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানা গেছে।


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই বলছেন, এ ধরনের "প্র্যাঙ্ক কালচার" এখনই বন্ধ করা উচিত এবং এই ধরনের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া দরকার, যাতে অন্যরা শিক্ষা নেয়।


ঘটনার জেরে নৈতিক শিক্ষা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশিষ্টজনরা বলছেন, শুধু আইন দিয়ে নয়, পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায় থেকেও নৈতিকতা শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মানুষের জীবনের মূল্য বুঝতে শেখে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top